লালন বাংলার বাউলসংস্কৃতির প্রধান পুরুষ। এই মরমি মহাজনের অন্তরস্পর্শী মনোহর পদাবলি দুই শতকেরও অধিককাল বাঙালির অধ্যাত্ম-ক্ষুধা ও রস-তৃষ্ণা নিবারণ করে চলেছে। প্রজন্ম-পরম্পরায় ক্রমে ক্রমে বহুমাত্রিক-লালন হয়ে উঠেছেন এক ধ্রপদি লোকব্যক্তিত্ব কালান্তরেও যাঁর আবেদন অক্ষুণ কী বাউলসম্প্রদায়ে, কী গ্রামীণ সমাজে, কী নাগরিক পরিমণ্ডলে, কী বিশ্বসভায়।
পঞ্চাশ বছরের অনুসন্ধান-অনুধ্যানে আবুল আহসান চৌধুরী লালনচর্চার যে ঋদ্ধ ধারা নির্মাণ করেছেন তার পরিচয়চিহ্নের স্মারক আমার লালন। মুগ্ধতা বা আবেগ নয়, নয় উদ্দেশ্যশাসিত মানসপ্রবণতা তাঁর নির্মোহ নিষ্ঠ মূল্যায়নে যে-লালন যুগপৎ মরমি ও দ্রোহী, সাধক ও সামাজিক, স্রষ্টা ও শিক্ষক, আত্মসমাহিত ও জাগরণের মশালচি তারই প্রকৃত স্বরূপ উদ্ঘাটিত হয়েছে। সেই চিন্তনের সারসংগ্রহই এই বই, আবুল আহসান চৌধুরীর আমার লালন।
আবুল আহসান চৌধুরী জন্ম ১৩ জানুয়ারি ১৯৫৩ কুষ্টিয়ার মজমপুরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় বিএ (অনার্স), এমএ ও পিএইচডি ৩২ বছর ধরে অধ্যাপনা পেশায় যুক্ত। বর্তমানে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক। মূলত প্রাবন্ধিক ও গবেষক সমাজমনস্ক ও ঐতিহ্যসন্ধানী। অনুসন্ধিৎসু এই গবেষক সাহিত্য-সংস্কৃতির নানা দুষ্প্রাপ্য ও অজ্ঞাত উপকরণ সংগ্রহ, উদ্ধার ও তা ব্যবহার করে থাকেন। তার লালন সাঁই, কাঙ্গাল হরিনাথ ও মীর মশাররফ হােসেন বিষয়ক গবেষণাকাজ দেশ-বিদেশে সমাদৃত