যেকোনো দেশের কবিতা, সে ইংরেজিই হোক, সে ফরাসিই হোক, কিংবা বাংলাই হোক;- সে তার নিজস্ব পরিমণ্ডলের প্রভাবে প্রভাবিত হতে বাধ্য। একটি দেশের একটি বিরাট রকমের মানসিক লাবণ্যের স্মারকচিহ্ন হচ্ছে সেই দেশের সাহিত্য-শিল্প তথা কবিতাও। পরিবেশের প্রভাবে সেই কবিতা বারবার চেহারা বদল করে। কখনো বিপ্লব এসে তাকে বলীয়ান শব্দসম্ভার উপহার দিয়ে যায়।
কখনো রাজনীতির অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা তাকে ব্যথিত আঁধারের বর্ণমালা করে। কখনো দুর্ভিক্ষে সে দীন, প্লাবনে সে প্রলয়চিহ্নগত। কখনো আবার মহামারির মৌলিক জরার আঁচড়ে আচমকা কেঁপে ওঠে তার শরীর। এক একবার এক এক রকম পরিস্থিতির উদ্ভব হয় আর সেই পরিস্থিতির বীজ ভেঙে নতুন চারার মতো নতুন পাতা এবং শিকড় জড়িয়ে বেরিয়ে আসে নতুন ধরনের কবিতা। বাংলাদেশেও এই রকম সাতপাঁচ পরিস্থিতির হরহামেশা আবহাওয়ায় কবিতার স্বভাব থেকে শুরু করে তার ভাষা ব্যবহার, প্রকরণগত শৈলী এবং আঙ্গিক-প্রকরণও পাল্টে গেছে বারবার।
কখনো সেই কবিতায় রাজনৈতিক শোষণ থেকে বেরিয়ে আসার বিদ্রোহী চিহ্ন পড়েছে। কখনো কম্পমান কৃষ্টির দুর্ভিক্ষ তাকে দীনতায় আচ্ছন্ন করার সঞ্চারে হয়েছে উজ্জীবিত।