ঝর্না রহমান, ‘জিনিয়াস’ শব্দটিও আপনার জন্য যথেষ্ট নয়। এ পর্যন্ত আপনার ৪০টি ধাঁধাকাব্যের সাথে আমাদের পরিচয় ঘটেছে; আর এ থেকে বোঝা গেছে যে, আপনি যেকোনো বিষয় নিয়ে অবলীলায় কাব্য রচনা করতে পারেন। আপনার দৃষ্টির সূ²তা আর বোধের গভীরতা যেকোনো কিছুকে তার বহিরঙ্গ ও অন্তরঙ্গÑদুদিক থেকেই সামনে এনে দাঁড় করিয়ে দেয় অভিনব শিল্প সুষমায়। তাই নিষ্প্রাণ চিরুনিও সুদন্তী নারী হয়ে যায়। কী চমৎকার অভিনব সব উপমা-উৎপ্রেক্ষা আর তুলনা! চিত্রকল্প সৃষ্টি করতে গিয়ে কাব্যের অন্তর্নিহিত সৌন্দর্যের এমন অপরূপ ছবি আপনি ফুটিয়ে তুলেছেন যে, বিস্ময়ের ঘোর কাটে না।
“চুম্বনে, দংশনে আর লেহনে মাতাল” কমলার স্বাদ আস্বাদনের এমন পঙ্ক্তি পাঠকমনকে সত্যি মাতাল করে তোলে। “দানা দানা হীরক দানা নানা বরণ তার/ তপ্ত জলে ডুব দিলে হয় রূপের গুল বাহার।” চাল থেকে ভাত হওয়ার এর চেয়ে সুন্দর কাব্যিক রূপ আমার অজানা। “দানার দানে ধন্য সবাই রাজা বা ভিখারি/একটি দানার জন্য লাগে যুদ্ধ মহামারী।” পরিসমাপ্তিতে কী দুর্দান্ত মেসেজ! চৌদ্দ চরণের এই ধাঁধাকাব্যটি যেন ঐতিহ্যের এক অনন্য গল্প হয়ে উঠেছে।