এ বইয়ের রচনাগুলো লিখতে শুরু করেছিলাম হঠাৎ করেই। স্পষ্ট কোনো পরিকল্পনা ছিল না যে আদ্যোপান্ত একটা বই-ই লিখে উঠব। তার চেয়ে বরং আমার কাছে স্পষ্ট ছিলচারপাশের বাস্তবতা, বাংলাভাষাকেই হত্যা করবার বাস্তবতা। এই নিধনপর্বে খুনির ভূমিকায় আছি আমরাই। ভুল বাক্য লিখছি, শব্দের ভুল প্রয়োগ করছি, ভাবছি ইংরেজিতে লিখছি বাংলায় সরকারি বেসরকারি সাধারণ ও বিশেষ, সব পর্যায়েই কাজটা করে চলেছি। আর এমন প্রশ্নও করে বসছি যে, বাংলা কি একুশ শতকে বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের কাজটি করবার মতো যথেষ্ট জোরদার ভাষা? স্বদেশপ্রেমে উত্তরটা যত ভালোই শোনাক, সন্তানকে ইংরেজি পাঠ দিচ্ছি শিশুকালেই। কম্পিউটারের রাজত্বে ইংরেজিটা না-জানার লজ্জায় মাথা হেঁট করছি। আমাদের রাষ্ট্র-কর্ণধারেরাও বিদেশে তো বটেই, দেশেও সভায় গুটি দুয়েক সাহেব থাকলেই ইংরেজিতে ভাষণ দিচ্ছেন।
তো সেই থেকে কথা সামান্যই শুরু করি। লিখতে লিখতে নিজেই কত বিষয় আর কত শব্দ নতুন করে দেখে উঠেছি, শব্দসন্ধানে আর শব্দের আমোদ সন্ধানে প্রেমিকের মতো ভাষার উদ্যানে ঘুরে বেড়িয়েছি। চুরানব্বইটি রচনার পর অগত্যা পঁচানব্বইয়ে এসে থেমেছি; কিন্তু নিরন্তর এখনো আছি সেই উদ্যানেই।