মির্জা আসাদুল্লাহ খাঁ গালিব (১৭৯৭-১৮৬৯) নাম নয়; ইতিহাস-ঐতিহ্য, স্তুতি- নিন্দা আর নিঃসঙ্গতার আশ্চর্য শিরোনাম। যিনি উর্দু ও ফারসি ভাষায় কবিতা লিখে সকল ভাষার, সকল মানুষের কাছেই হয়েছেন নন্দিত ও গৃহীত। জীবনের দিকে তাকালে মনে হয়, জাহান্নামের আগুনে বসে কেবলই 'পুষ্পের হাসি' দিয়েছেন পৃথিবীকে।
জীবনের মহাসমুদ্রে সংকট ও সম্ভাবনার দুটি পাল উড়িয়ে চলেছিলেন গালিব। শিল্প বা শিল্পীর প্রকৃত মূল্যায়ন যে মৃত্যুর পরেই উদ্ভাসিত হয়, তার উজ্জ্বল উদাহরণ গালিব নিজেই। মৃত্যুর ১৫৫ বছর পরও তাঁকে, তাঁর কবিতা ও আধ্যাত্মবাদকে নিয়ে চর্চা অব্যাহত।
ক্রমশ পরিবর্তিত হচ্ছে পৃথিবী। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির রূপবদলও থেমে নেই। কিন্তু এতসব কিছুর ভেতর মির্জা গালিব এখনও বর্তমান এবং প্রাসঙ্গিক। মনে হয় কবিতার স্তবক যেখানেই উচ্চারিত হবে- অনিবার্যভাবে সেখানে উপস্থিত হবেন প্রিয় গালিব।
বিশ্বসাহিত্যের পাশাপাশি বাংলা সাহিত্যের ধ্রুপদি ও সমকালীন কবিগণও তাঁদের কবিতায় শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেছেন গালিবের প্রতি। কেউ কেউ কবিতার মধ্যেই লিপিবদ্ধ করেছেন গালিবের শৈল্পিক, নিঃসাড় ও নিঃসঙ্গ জীবনের আখ্যান। সেসব কবিদের কবিতা নিয়েই এই সংকলনের প্রথম পর্ব পৃথিবী ও একাকী কবি।