মানবজীবনের চারদিকটাতেই গিজগিজ করছে নানান রকম গল্প। সেসব গল্প কখনো শুনতে, দেখতে অথবা পড়তে আমাদের বীভৎস লাগে, হাসি পায় কিংবা কখনো দুঃখে নাড়ার দহন জেগে ওঠে হৃদয়ে। যাপিত জীবন পুরাটাই যেন এক মহা গল্পসংকলন। পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থা মানুষের শ্রেণিবিন্যাসকে যেমন ফারাক করেছে, তেমন ভিন্নতা আছে মানুষের গল্পেরও। নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত আর উঁচুতলা সমাজের যে সামাজিক দ্বন্দ্ব-তাতে দিবালোকের মতো ধরা দেয় একটি ব্যাপার-তা হলো গল্পের ভিন্নতা। এই যে চতুর্দিকে গল্প আর গল্প-তার আড়ালেরও কিছু অদেখা গল্প থাকে, যা পুঁজিবাদী সমাজ সামনে আনতে চায় না! অথবা পৃথিবীর চিরাচরিত প্রথানুযায়ী সেসব আড়ালে-আবডালেই থেকে যায়। অথচ মানবজীবনের যে গল্পগুলোর সাথে আমাদের প্রতিনিয়ত দেখাসাক্ষাৎ, তার চেয়ে অদেখা সে গল্পগুলো আরো বীভৎস, হাসি এবং দুঃখের। কবি ও কথাশিল্পী ইরফান তানভীরের বড় বৈশিষ্ট্য হলো, তিনি গল্প তুলে আনেন গল্পেরও পেছন থেকে! যা অনেকের চোখে তেমন ধরা দেয় না। আর তাই, তার গল্পের পরতে পরতে ওত পেতে থাকে অস্বস্তি। প্রবল অস্বস্তি নিয়েই 'সাহেবজাদা' গল্পের শরাফতি বকশ, 'অপঠিত আমলনামার' নজির আহমদ চৌধুরী হাত-ধরাধরি করে এগিয়ে চলে গল্পের অন্তরালে লুকিয়ে থাকা অভ্যন্তরের গল্পের দিকে।