সংক্ষেপে এই বই
সৃষ্টিগতভাবেই পুরুষ বহুগামী। কেউ শারীরিকভাবে, কেউ মানসিকভাবে। কারোটা প্রকাশিত, কারোটা অপ্রকাশিত। তবে পৃথিবীর তাবৎ প্রাণিকুলের মধ্যে মানুষই একমাত্র প্রজাতি, যে তার রিপুকে সংযমের শেকলে বেঁধে রাখতে পারে। সে শেকল সামাজিক মূল্যবোধের কিংবা চারিত্রিক দৃঢ়তার। সে শেকল ধর্মীয় অনুশাসনের কিংবা পারিবারিক শিক্ষার। সে শেকল ভালোবাসার, ভালোবাসার মানুষটির প্রতি সৎ থাকতে চাওয়ার। আর এটাই মানুষ ও পশুর মধ্যে পার্থক্য।
পেশাগত কারণে প্রচুর নারীর সান্নিধ্যে আসতে হয়েছে আমাকে। আর লেখালিখি করতে গিয়ে বেড়েছে তা বহুগুণ। কি বাস্তবে, কি ভার্চুয়াল জগতে, চারদিকে শুধু প্রেমের সিম্ফনি। আমার ভেতরে বহুগামী বীর্যেরা নেচে ওঠে। বিদ্রোহ করতে চায়। বাধানিষেধের দেওয়াল ভেঙে বেরিয়ে আসতে চায়। চিরায়ত পৌরুষ দখল নিতে চায় আরও অনেক নামি বেনামি জমিন। আমার ভেতরের পশু ঢুকে পড়তে চায় অন্যের অরক্ষিত বাগানে। আমারও বহুগামী হতে ইচ্ছে করে। খুব ইচ্ছে করে। আর তখনই মনে হয়, বিশ্বাসী দুই চোখ দেখছে আমায়। সে চোখের তারায় ঝিকিমিকি করে ভরসার কাঞ্চনজঙ্ঘা। বিশ্বাসের সে দৃষ্টি ফাঁকি দিয়ে, ভরসার সে পাহাড় ডিঙিয়ে, আমার আর পুরুষ হওয়া হয়ে ওঠে না। আমি আর অবিশ্বাসী হতে পারি না। এ আমার অক্ষমতা। অবিশ্বাসী হওয়ার চাইতে অক্ষম হওয়া আমার কাছে অনেক বেশি শ্রেয় মনে হয়।
ঈশ্বর কোথায় বসে দেখছেন আমাকে, আমি জানি না। মনে হয়, যেন আমিই আমার ঈশ্বর। আমিই দেখি আমার প্রতিটি কাজ। আমিই বুঝি আমার প্রতিটি প্রকাশিত অপ্রকাশিত মনোভাব। আমাকেই প্রতিনিয়ত কৈফিয়ত দিতে হয় আমার কাছে। আমার কেবলই মনে হয়, দেখা মানুষের কাছেই যদি সৎ থাকতে না পারি, তাহলে অদেখা ঈশ্বরের কাছে সৎ থাকব কেমন করে?