সংক্ষেপে এই বই
বলতে পারিস, মানুষ প্রেমে পড়ে কেন?
এ কেমন প্রশ্ন? ভাবনার জগতে ছিল মালতী। শিলা আহমেদের এমন আচমকা প্রশ্নে থতমত খেয়ে গেল। এই বয়সে কারও প্রেমে পড়েছে নাকি ঐশ্বর্যময়ী? পড়তেও পারে। বয়সটাকে তো আঁচলে গিট দিয়ে রেখেছে! যা মাথা ঘুরে যাওয়া ফিগার, যে সম্মোহনী চেহারা, সে না পড়লেও তার প্রেমে পড়ার জন্য পুরুষের অভাব হবে না। নইলে হঠাৎ এই প্রশ্ন কেন? সরাসরি তাকাল মালতী। অসাধারণ তার বসার ভঙ্গি। সবসময় শিরদাঁড়া সোজা করে বসে। গোলাপি একটা কার্ডিগান পরে আছে। নিচে সম্ভবত শার্ট জাতীয় কিছু। বুক অনেকটাই খোলা। তার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছে চোখধাঁধানো কাঞ্চনজঙ্ঘা! লজ্জায় চোখ নামিয়ে নিল মালতী। মৃদুস্বরে বলল, জানি না আপু। তবে আমার মনে হয়, প্রত্যেক মানুষই কখনো না কখনো প্রেমে পড়ে। কারোটা প্রকাশিত হয়, কারোটা অপ্রকাশিতই রয়ে যায়।
বাহ্! সুন্দর বললি তো! তবে এই পৃথিবী শুধু প্রকাশিত প্রেমকেই প্রেম মনে করে। প্রকাশিত প্রেমকাহিনি নিয়েই রচিত হয় গল্প, কবিতা, উপন্যাস। অথচ অপ্রকাশিত প্রেমও যে প্রকাশিত প্রেমের চাইতে অনেক গভীর হতে পারে, হয়তো জানে না অনেকেই। মানতে চায় না কেউ। বলে আবার উদাস হয়ে গেল শিলা আহমেদ।
ধারণাটা আরো দৃঢ় হলো মালতীর। নিশ্চয়ই প্রেমে পড়েছে রহস্যময়ী। প্রেমে পড়লে মানুষের ভেতর এক ধরনের অস্থিরতা দেখা দেয়। কারণে-অকারণে উদাস হয়ে যায়। চল্লিশের এই নারীর ভেতর অস্থিরতা আর উদাসীনতা দুটোই দেখেছে মালতী। তবে যে বলেছিল, একটি কলেজ পড়ুয়া মেয়ে আছে তার? সেই মেয়ে যদি মায়ের পরকীয়া প্রেমের কথা জেনে ফেলে, কী করে মুখ দেখাবে তাকে? নাহ্, চিনতে পারছে না সামনে বসা এই রহস্য মানবীকে।