বাছুর মরে গেলে তার চামড়া দিয়ে মূর্তি বানিয়ে গাভীর সামনে রাখা হয় যাতে বিভ্রান্ত গাভী অন্তত দুধ দেয়া অব্যাহত রাখে। অনুবাদ প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ সে প্রসঙ্গটি টেনে এনেছিলেন। অমিয় চক্রবর্তীকে পাঠানাে একটি চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন, অনুবাদ মরা বাছুরের মূর্তি, তাতে আহবান নেই, ছলনা আছে।>
ছােটগল্প আমার নিজের কাজের ক্ষেত্র। নিজের মৌলিক গল্প লেখা যখন স্থগিত থেকেছে তখন অন্তত গল্প লেখার আনন্দটিকে চাঙা রাখতে মাঝে মাঝে সেই ছলনার আশ্রয় নিয়েছি। অনুবাদ করেছি বিশ্বসাহিত্যের আমার পছন্দের কিছু লেখকের গল্প। বিভিন্ন সময়ে করা সেই অনূদিত গল্পের কয়েকটি সংকলিত হলাে এই বইয়ে। নানা দেশের নানা স্বাদের গল্প । জাপানি হারুকি মুরাকামির গল্পের অনিকেত মানুষ, আর্জেন্টিনার আবেলারদো কাস্তিলের গল্পে ল্যাটিন আমেরিকার চমক, চেক অভিবাসী লেখক মিলান কুন্ডেরার গল্পে রাজনৈতিক আদর্শ নিয়ে চাপা কৌতুক, ম্যাক্সিকান ওক্টাভিও পাজের গল্পের পরাবাস্তব জগৎ, আর তুর্কি ওরহান পামুকের গল্পে ইস্ত স্কুিলের আটপৌরে পারিবারিক আনন্দ, বিষাদ। স্মরণে রাখা ভালাে যে নিজের লেখা অনুবাদ করে রবীন্দ্রনাথও ছলনার আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে বিশ্ববাসীর পক্ষে তার লেখার স্বাদ নেয়ার সুযােগ ঘটেছিল।