জহির দেহলভি শেষ মোগল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের দরবারের একজন তরুণ সেবক এবং খ্যাতিমান উর্দু কবি ইব্রাহিম জওকের শাগরেদ ছিলেন। ১৮৫৭ সালে সংঘটিত সিপাহি বিদ্রোহে বিপর্যয় ও মোগল সাম্রাজের অবসান এবং ব্রিটিশরাজের পরিপূর্ণ কর্তৃত্বে অধিষ্ঠিত হওয়ার মতো ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন তিনি। জহির যখন তাঁর মৃত্যুশয্যায়, তখন এই স্মৃতিকথা লিখেছেন। এটি শুধু মোগল দরবারের ক্ষয়িষ্ণু ঐশ্বর্য এবং অপস্রিয়মাণ জীবনধারায় প্রবেশের বিবরণী নয়; বরং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, বিদ্রোহের ভয়াবহ দৃশ্য এবং বিদ্রোহের পর দিল্লি অবরোধ করে প্রতিশোধস্পৃহা চরিতার্থ করার নারকীয় দৃশ্যগুলো দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছে তাঁর। নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত এক বিশ্বের চরম সংকটময় মুহূর্তের সাক্ষী জহির দেহলভির স্মৃতিকথা দাস্তান-এ-গদর ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহ ও বিদ্রোহের তিক্ত পরিণতির ঘটনাগুলো কাছে থেকে দেখা আত্মকথন। জহির দেহলভি তাঁর অবস্থান ও মনোভাব প্রকাশে কোনো অস্পষ্টতা রাখেননি।
ব্রিটিশ গোলামির শৃঙ্খল থেকে ভারতবাসীর প্রথম সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রাম ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের সাক্ষী দিল্লিবাসী জহির দেহলভির দাস্তান-এ-গদর একটি তথ্যসমৃদ্ধ গ্রন্থ। তাঁর উপস্থাপনার বৈশিষ্ট্যের কারণে পাঠকেরা নিজেদের সিপাহি বিদ্রোহের সময় সংঘটিত ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে দেখতে পাবেন।