সাল ১৯৪৭। ব্রিটিশরা ভারতবর্ষকে ভাগ করে দিয়েছে দুটি দেশে। হিন্দু ভারত ও মুসলিম পাকিস্তান। প্রায় এক কোটি মানুষ সদ্য চিহ্নিত সীমান্ত অতিক্রম করে তাদের নতুন গন্তব্য, নতুন দেশ বেছে নেওয়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘাতে জড়িত হলো। নিহতের সংখ্যা দশ লাখে পৌঁছল। সেই শঙ্কাপূর্ণ দিনগুলোতেও সীমান্তের নিকটবর্তী কিছু কিছু গ্রাম ছিল শান্তির নীড়। কিন্তু সীমান্তের উভয় পারে হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গায় নিহতের সংখ্যা যখন বাড়তে থাকে পাকিস্তান ও ভারত অভিমুখী শরণার্থীর ঢলও বেড়ে চলে। দাঙ্গার মর্মস্পর্শী কাহিনি, নৃশংস হত্যাকাণ্ডের খবর সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতেও অজানা বিপদের ছায়া বিস্তার করে।
ভারত বিভাগের পটভূমিতে লেখা খুশবন্ত সিং-এর উপন্যাস 'ট্রেন টু পাকিস্তান'-এ নিখুঁতভাবে প্রতিফলিত হয়েছে সমসাময়িক পরিস্থিতিতে দুই সম্প্রদায়ের লোকদের মানসিক অবস্থা। শুধু সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্বই 'ট্রেন টু পাকিস্তান'-এর মূল উপজীব্য নয়, শিখ ও মুসলমানদের মধ্যে বিদ্যমান শত শত বছরের পুরনো ধর্মীয় ঘৃণা বিদ্বেষের মাঝে সেতুবন্ধন সৃষ্টির প্রয়াস হিসেবে শিখ যুবকের সঙ্গে মুসলিম বালিকার প্রেমের ঘটনাও প্রাধান্য পেয়েছে এই উপন্যাসে।