কর্নেল জেমস অ্যাচিলেস কাকপ্যাট্রিক হায়দরাবাদে নিজামের দরবারে বৃটিশ রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়ােজিত ছিলেন ১৭৯৭ সাল থেকে ১৮০৫ সাল পর্যন্ত। একটি জাতিকে পদানত করার বৃটিশ অভিপ্রায়ে তার নাম স্মরণীয় রাখার অভিলাষ পােষণ করতেন তিনি। কিন্তু পরিবর্তে তিনি বিজয়ী হতে পারেননি,বরং তাকে পরাস্ত হতে হয়েছিল মােগল বংশােদ্ভূত অভিজাত নারী খায়রুন্নিসা বেগমের কাছে । ১৮০০ সালে তিনি খায়রুন্নিসার প্রেমে পড়েন,ইসলামী রীতি অনুসারে তাঁকে বিয়ে করে মােগল অভিজাতদের জীবনাচরণে অভ্যস্ত হয়ে উঠেন এবং এক পর্যায়ে ইসলাম গ্রহণ করেন । অষ্টাদশ শতাব্দী ও উনিশ শতাব্দীর প্রথম অংশ জুড়ে বহু বৃটিশ অফিসারের ভারতীয় রীতিনীতি ও ধর্ম গ্রহণ সাধারণ। ঘটনায় পরিণত হয়েছিল। ভারতীয় অভিজাত পরিবারের সাথে বৈবাহিক সূত্রে তাদের সম্পর্ক স্থাপনের একটি সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল। বহু বছর পর ইতিহাসের এই অজানা দিকগুলাে উঠে এসেছে উইলিয়াম ড্যালরিম্পল এর ‘হােয়াইট মােগলস’ গ্রন্থে । তিনি বৃটিশ অফিসারদের অনেক উইল দেখেছেন,অনেকে তাদের সকল সম্পত্তির মালিকানা ন্যস্ত করেছেন তাদের। ভারতীয় স্ত্রীদের উপর। হােয়াইট মােগলস’ যদিও জেমস কার্কপ্যাট্রিক ও খায়রুন্নিসা বেগমের সত্যিকার প্রেমকাহিনি ভিত্তিক,কিন্তু বাস্তবে এটি ওই সময়ের বৃটিশ ও ভারতীয় অভিজাতদের সামাজিক ইতিহাসের একটি অংশ। ড্যালরিম্পল তার কাহিনিকে শুধু জেমস কার্কপ্যাট্রিক ও খায়রুন্নিসার প্রেম ও বিয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে ভারতে বৃটিশ পরিচালিত বাণিজ্য,সামরিক ও রাজনৈতিক কর্মতৎপরতা দিয়েও সমৃদ্ধ করেছেন তাঁর গবেষণার ভিত্তিতে । কাহিনীর দুঃখজনক দিক কার্কপ্যাট্রিকের মৃত্যু এবং খায়রুন্নিসা বেগমের দুই সন্তানকে ইংল্যান্ডে পাঠিয়ে দেয়ার ঘটনা-যাদের সাথে আর কখনাে খায়রুন্নিসার সাক্ষাৎ ঘটেনি। বহুকাল পর খায়রুন্নিসার তাঁর এক নাতনির সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলে,পুরনাে ঘটনাগুলােকে আবার মূর্ত করে তােলে। ‘হােয়াইট মােগলস’ উইলিয়াম ড্যালরিম্পেলের ব্যতিক্রমী এক সৃষ্টি,যা পাঠকপ্রিয়তা লাভ করেছে এটি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে।
উইলিয়াম ড্যালরিম্পল এর সেরা সাহিত্যিক সৃষ্টি আপনার সংগ্রহে রাখুন। তার লেখা আপনাকে নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। ইতিহাস ও সংস্কৃতির গভীরে ভিন্ন অভিজ্ঞতা পেতে বইটি কিনুন।